Translate

মঙ্গলবার, ৭ জুলাই, ২০১৫

হয়তো মেয়েটি তার প্রেমিকের

feeling ভাল
থাক অই সকল প্রেমিকগন!
এটাই নিয়ম....
দীর্ঘদিন প্রেম করার পর পরিবারের
চাপে অবশেষে মেয়েটা অচেনা একটা
ছেলেকে বিয়ে করবে। বাধ্য হয়েই,
বাসর রাতেই নব বধূটির মধ্যে স্বামী
প্রীতি ফুটে উঠবে। নববধূর খামচে
ধরা বিছানাটাই শুধু নজরে পড়বে।
কুমারিত্ব হরণের নেশায় ব্যস্ত সেই
বরের, মেয়েটির গড়িয়ে পড়া কয়েক
ফোটা জল তার অদেখাই থেকে যাবে।
মেয়েটির দ্বারা বরের শরীরের
প্রতিটা খামচির দাগ বরকে আরো
উন্মাদ করে তুলবে! আর সে সময়
হয়তো
মেয়েটির পুরোনো প্রেমিকের হাত
নতুন ব্লেডে আচড়ে রক্তাক্ত হবে।
ভোর হবে....
মেয়েটি স্বামী, নতুন বাবা -মাকে
নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাবে...একটা সময়
হয়তো মেয়েটি তার প্রেমিকের কথা
ভুলে যাবে। আর না হয় কোনো এক
অবেলায় প্রেমিকের কথা মনে করে
চোখের কোণে জল জমাবে...
প্রেমিকটিও হয়তো প্রেমিকার কথা
ভুলতে চেষ্টা করতে করতে নতুন এক
প্রেমিকার সন্ধান পেয়ে যাবে....
এসব ঘটনা আজ কালের না... যুগ যুগ
ধরে
এমন ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। তারপরেও
জীবনে প্রেম আসে, আসবে...."
-সুখের হোক মেয়েটার সংসার। ভালো
থাকুক এই সকল প্রেমিকরা।"

রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০১৪

আসমানী

আসমানী
জসীমউদ্দিন


আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও,
রহিমদ্দির ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও।
বাড়ি তো নয় পাখির বাসা ভেন্না পাতার ছানি,
একটুখানি বৃষ্টি হলেই গড়িয়ে পড়ে পানি।
একটুখানি হাওয়া দিলেই ঘর নড়বড় করে,
তারি তলে আসমানীরা থাকে বছর ভরে।
পেটটি ভরে পায় না খেতে, বুকের ক-খান হাড়,
সাক্ষী দিছে অনাহারে কদিন গেছে তার।
মিষ্টি তাহার মুখটি হতে হাসির প্রদীপ-রাশি
থাপড়েতে নিবিয়ে দেছে দারুণ অভাব আসি।
পরনে তার শতেক তালির শতেক ছেঁড়া বাস,
সোনালি তার গা বরণের করছে উপহাস।
ভোমর-কালো চোখ দুটিতে নাই কৌতুক-হাসি,
সেখান দিয়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু রাশি রাশি।
বাঁশির মতো সুরটি গলায় ক্ষয় হল তাই কেঁদে,
হয় নি সুযোগ লয় যে সে-সুর গানের সুরে বেঁধে।
আসমানীদের বাড়ির ধারে পদ্ম-পুকুর ভরে
ব্যাঙের ছানা শ্যাওলা-পানা কিল্-বিল্-বিল করে।
ম্যালেরিয়ার মশক সেথা বিষ গুলিছে জলে,
সেই জলেতে রান্না-খাওয়া আসমানীদের চলে।
পেটটি তাহার দুলছে পিলেয়, নিতুই যে জ্বর তার,
বৈদ্য ডেকে ওষুধ করে পয়সা নাহি

বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০১৪

আকাশ

আকাশ – নির্মলেন্দু গুন

আমার সমস্ত ভাবনা যখন তোমাকে ছোঁয়,
আমার সমস্ত উপলব্ধি যখন তোমার
আত্মাকে স্পর্শ করে, আমার সমস্ত বোধ
যখন তোমার বোধিতে নিমজ্জিত হয়,
তখন আমার প্রাণের গভীর থেকে
স্বতঃস্ফূর্ত মোহন মন্ত্রের মতো উচ্চারিত হয়
একটি অত্যন্ত সহজ শব্দ…”আকাশ” ।

আমি শব্দটিকে ক্রমাগত উচ্চারণ করি ।
জানি না কেন এ শব্দটিই শুধু
এত বারবার ঘুরে ঘুরে আসে ।
জানি না কী পেয়েছে সে আমার ভিতরে?
আমি লক্ষ্য করেছি, ‘আকাশ’ শব্দটি
উচ্চারিত হওয়ার পরে আমার ভিতরে
আর কোন কষ্টই অবশিষ্ট থাকে না ।
যেন যুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত বুলেটের মতো
আমার বুকের ভিতরে গেঁথে ছিল
এই যন্ত্রণাক্ত আকাশ শব্দটি ।

তোমার আমার মাঝে আছে এরকম
অনেক আকাশ । – আমি
ব্যর্থ প্রেমিকের মতো মুগ্ধমূর্খচোখে
কেবল তাকিয়ে থাকি আকাশের দিকে ।

তোমার খোলা হাওয়া"

তোমার খোলা হাওয়া"
____ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


তোমার খোলা হাওয়া
লাগিয়ে পালে....
টুকরো করে কাছি,
ডুবতে রাজি আছি,
আমি ডুবতে রাজি আছি॥
সকাল আমার গেল মিছে,
বিকেল যে যায় তারি পিছেগো,
রেখো না আর, বেঁধো না আর
কূলের কাছাকাছি॥
মাঝির লাগি আছি জাগি সকল রাত্রিবেলা,
ঢেউগুলো যে আমায়
নিয়ে করে কেবল খেলা।
ঝড়কে আমি করব মিতে,
ডরব না তার ভ্রুকুটিতে
দাও ছেড়ে দাও, ওগো,
আমি তুফান পেলে বাঁচি!

আমি শুনেছি সেদিন তুমি

আমি শুনেছি সেদিন তুমি
মৌসুমী ভৌমিক-


আমি শুনেছি সেদিন তুমি সাগরের ঢেউয়ে চেপে
নীলজল দিগন্ত ছুঁয়ে এসেছো
আমি শুনেছি সেদিন তুমি নোনা বালি তীর ধরে
বহু দূর বহু দূর হেটে এসেছ
আমি কখনো যাই নি জলে কখনো ভাসিনি নীলে
কখনো রাখিনি চোখ ডানা মেলা গাংচিলে
আবার যেদিন তুমি সমুদ্র স্নান -এ যাবে

আমাকে ও সাথে নিও নেবে তো আমায় বল
নেবে তো আমায়
আমি শুনেছি সেদিন নাকি তুমি তুমি তুমি মিলে
তোমরা সদলবলে সভা করে ছিলে
আর সেদিন তোমরা নাকি অনেক জটিল ধাঁধাঁ
না বলা অনেক কথা কথা তুলেছিলে
কেন শুধু ছুটে ছুটে চলা একা একা কথা বলা
নিজের জন্যে বাঁচা নিজেকে নিয়ে
যদি ভালোবাসা না-ই থাকে শুধু একা একা লাগে
কোথায় শান্তি পাব কোথায় গিয়ে বল কোথায়
গিয়ে
আমি শুনেছি তোমরা নাকি এখনো স্বপ্ন দেখো
এখনো গল্প লেখ গান গাও প্রাণ ভরে
মানুষের বাঁচা মরা এখনো ভাবিয়ে তোলে
তোমাদের ভালবাসা এখনো গোলাপে ফোটে
আস্থা হারানো এই মন নিয়ে আমি আজ
তোমাদের কাছে এসে দু হাত পেতেছি
আমি দুচোখের গহরে শূন্যতা দেখি শুধু
রাত ঘুমে আমি কোনো স্বপ্ন দেখি না
তাই স্বপ্ন দেখব বলে আমি দুচোখ পেতেছি
তাই তোমাদের কাছে এসে আমি দু হাত পেতেছি
তাই স্বপ্ন দেখব বলে আমি দুচোখ পেতেছি

"ভালবাসি, ভালবাসি"

"ভালবাসি, ভালবাসি"
___সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়


ধরো কাল তোমার পরীক্ষা,রাত
জেগে পড়ার
টেবিলে বসে আছ,
ঘুম আসছে না তোমার
হঠাত করে ভয়ার্ত
কন্ঠে উঠে আমি বললাম-

ভালবাস? তুমি কি রাগ করবে?
নাকি উঠে এসে জড়িয়ে ধরে বলবে,
ভালবাসি, ভালবাসি..
ধরো ক্লান্ত তুমি, অফিস
থেকে সবে ফিরেছ,
ক্ষুধার্ত তৃষ্ণার্ত পীড়িত..
খাওয়ার টেবিলে কিছুই তৈরি নেই,
রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে ঘর্মাক্ত
আমি তোমার
হাত ধরে যদি বলি- ভালবাস?
তুমি কি বিরক্ত হবে?
নাকি আমার হাতে আরেকটু
চাপ দিয়ে বলবে
ভালবাসি, ভালবাসি..
ধরো দুজনে শুয়ে আছি পাশাপাশি,
সবেমাত্র ঘুমিয়েছ তুমি
দুঃস্বপ্ন দেখে আমি জেগে উঠলাম
শশব্যস্ত
হয়ে তোমাকে ডাক দিয়ে যদি বলি-
ভালবাস?
তুমি কি পাশ ফিরে শুয়ে থাকবে?
নাকি হেসে উঠে বলবে
ভালবাসি, ভালবাসি..

প্রেম নেই তবু প্রেমের কান্না মরেনি

:::কান্না ::: আহসান হাবীব:::
 প্রেম নেই তবু প্রেমের কান্না মরেনি


প্রেম নেই তবু প্রেমের কান্না মরেনি
তুমি নেই তবু তোমাকে পাওয়ার বাসনার সোনা ঝরেনি
এই সর্পিল জীবনের পথে আলগোছে ছুঁয়ে যাওয়া
তুমি যেন কোন চৈত্র রাতের দূর সমুদ্র হাওয়া!


তুমি নেই তবু একটি বিপুল বিস্ময় আছে মনে-
হঠাৎ কখনো পাখি ডেকে যায় বনে,
হঠাৎ কখনো বাতার পাশে হেনার গন্ধ জাগে;
হঠাৎ কখনো দুঃস্বহ অনুরাগে
একটি ব্যকুল গান রেখে যাও সেখানে
আমার গানের শ্রান্ত পাখিরা নীড় খুঁজে ফেরে যেখানে।

কোনো কোনো দিন বৈশাখী মেঘ, দোলা দিয়ে যাও তুমি,
কেঁপে ওঠে ঘন অমাবশ্যায় নির্জন বনভূমি।
সাড়া দাও তুমি গহন অন্ধকারে,
চেনা পৃথিবীর দিগন্ত রেখা ঘুঁচে যায় বারেবারে।
জাগে শুধু সেই অন্ধকারের গহনে
কুঁড়ির গন্ধ অন্ধ আবেগে অনাদি কালের দহনে।

তোমার পাখার সুর জেগে ওঠে রূপালি নদীর তীরে
আমার পায়ের চিহ্ন তখন রাতের পাহাড় ঘিরে,
ছুঁয়ে যেতে চায় তোমার আকাশ আলগোছে ভালবেসে।
হঠাৎ কখনো পথ ঢেলে দাও তোমার কৃষ্ণ কেশে!
যারে পেতে চাই নিজের ছায়ায় ঢাকা সে
বৈশাখী মেঘ তবু রেখে যায় ঝড়ের ইশারা আকাশে।

সেই বৈশাখী মেঘের আবেগে আষাঢ়ের আঙিনাতে
যদি কোনদিন বন্যা নামায় এমনি ঝড়ের রাতে-
এই আশা নিয়ে প্রেমের কান্না জাগে,
দিনের পৃথিবী ঘুমালে তখন স্বপ্নের দোলা লাগে।